রেওয়ামিল প্রস্তুতকরণে বিবেচ্য বিষয়সমূহ

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - হিসাববিজ্ঞান - রেওয়ামিল | | NCTB BOOK
1

রেওয়ামিল তৈরির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা। সে লক্ষ্যেই প্রতিটি উদ্বৃত্ত যাতে করে সঠিকভাবে রেওয়ামিলে অন্তর্ভুক্ত হয়, তার জন্য রেওয়ামিল প্রস্তুতের পূর্বে বিশেষ সতর্কতা এবং কিছু বিষয় বিবেচনা করে রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয়। ব্যবসায়ের স্বার্থেই রেওয়ামিল প্রস্তুত করার পূর্বে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয়।

১। মজুদ পণ্য লিপিবদ্ধকরণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। প্রারম্ভিক মজুদ পণ্যের মূল্যকে রেওয়ামিল প্রস্তুতের তারিখে ব্যয় বা খরচরূপে গণ্য করে রেওয়ামিলের ডেবিট কলামে দেখাতে হবে কিন্তু সমাপনী মজুদপণ্যের মূল্যকে রেওয়ামিলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না কারণ সমাপনী মজুদ পণ্য খতিয়ানের উদ্বৃত্ত নয় এমনকি সমাপনী মজুদ পণ্যের মূল্য প্রারম্ভিক মজুদ পণ্য এবং ক্রয়ক্রীত পণ্যের অংশ বিশেষ ।

২। যখন “সমন্বিত ক্রয়” অথবা “বিক্রীত পণ্যের ব্যয়” রেওয়ামিলে অন্তর্ভুক্ত হয়, তখন প্রারম্ভিক মজুদ পণ্যকে রেওয়ামিলে অন্তর্ভুক্ত না করে সমাপনী মজুদ পণ্যকে রেওয়ামিলের ডেবিট কলামে সম্পদ হিসাবে দেখাতে হবে। কারণ, সমন্বিত ক্রয় = প্রারম্ভিক মজুদপণ্য + নিট ক্রয় – সমাপনী মজুদপণ্য।

৩। মনিহারি মজুদের ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক মনিহারি মজুদকে ব্যয় হিসাবে রেওয়ামিলের ডেবিটে দেখাতে হবে কিন্তু সমাপনী মনিহারি অন্তর্ভুক্ত হবে না ।

৪। হাতে নগদ, ব্যাংক জমা, দেনাদার, পাওনাদার প্রভৃতি চলতি সম্পদ ও চলতি দায়ের প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত রেওয়ামিলে আসবে না কারণ এগুলো সংশ্লিষ্ট হিসাবের সমাপনী উদ্বৃত্তের সাথে সমন্বিত থাকে।

৫। সম্পদের বিপরীতে সৃষ্ট সঞ্চিতি যেমন : কুঋণ সঞ্চিতি বা সন্দেহজনক পাওনা সঞ্চিতি, দেনাদার বাট্টা সঞ্চিতি বা প্রদেয় বাট্টা সঞ্চিতি ও প্রাপ্য বিলের বাট্টা সঞ্চিতি রেওয়ামিলে ক্রেডিট হবে।

৬। দায়ের বিপরীতে সৃষ্ট সঞ্চিতি যেমন: পাওনাদারের বাট্টা সঞ্চিতি বা প্রাপ্য বাট্টা সঞ্চিতি বা পাওনা বাট্টা সঞ্চিতি ও প্রদেয় বিলের বাট্টা সঞ্চিতি হিসাববিজ্ঞানের ‘রক্ষণশীলতার প্রথা' অনুযায়ী দায়ের বিপরীতে সঞ্চিতি ধার্য অনুচিত। যদি হিসাবের বইতে ধার্যকৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তবে রেওয়ামিলের ডেবিট কলামে লেখা যেতে পারে। দায়ের বিপরীতে সঞ্চিতি ধার্য পরিহার করাই উত্তম।

৭। কতিপয় হিসাবের সাথে প্রদত্ত না প্রাপ্ত উল্লেখ থাকে না, সেক্ষেত্রে উক্ত হিসাব গুলোকে প্রদত্ত ধরে রেওয়ামিলের ডেবিট দিকে লিখতে হবে। যেমন – ভাড়া, বাট্টা, কমিশন, সুদ ইত্যাদি।

৮। বিক্রয় খাতিয়ানের উদ্বৃত্তকে দেনাদার হিসাব ধরে ডেবিট করতে হবে।

৯। ক্রয় খতিয়ানের উদ্বৃত্তকে পাওনাদার হিসাব ধরে ক্রেডিট করতে হবে।

১০। সম্ভাব্য দায় ও সম্ভাব্য সম্পদ রেওয়ামিলের ভিতরে আসবে না, কারণ এগুলো নিশ্চিত দায় বা সম্পদ নয় সম্ভাব্য দায় ও সম্পদকে পাদটীকা হিসাবে রেওয়ামিলের নিচে উল্লেখ করা যেতে পারে।

Content added By
Promotion